দূরের একটি দ্বীপ

 এক বিকেল বেলা তুমি রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে। ডানে বামে বারেবারে অধীর বৃষ্টিপাতে উতলা হয়ে উঠেছো। সেই রাস্তার একমাত্র রিকশাটিতে আমি চড়ে বসে আছি অজান্তে। আমি এখন এই রাস্তা দিয়ে যাবো অথবা তুমি এখন এই রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশার জন্য অপেক্ষা করবে এসব আটপৌরে ব্যক্তিগত জীবন জানাজানি থেকে আমরা বহুদূর চলে গেছি। এরচেয়ে বেশি যদি বলি, তুমি এখন কেমন আছো অথবা আমি এখন কোথায় থাকি এসব দৈনন্দিন তথ্যও আমাদের আর জানা থাকে না। এরচেয়েও যদি বেশি বলি, আমরা পরস্পরের দিকে আলগোছে তাকানো মাত্র অথবা দূর থেকে ছায়াচ্ছন্ন অবয়ব দেখেই চিনে ফেলতে পারি না। রাস্তার অচেনা একটি মুখের মতোই তাকাই প্রথমে, তারপর কাটে একটি মুহূর্ত, অতল স্মৃতির গহ্বরে গিয়ে হঠাৎ ঠাউর হয়। আরে! 

তারপর কি হয়? 

তারপর তোমার কি হয়?

বুকের ভেতরটা কি মোচড় দিয়ে উঠে? উথালপাতাল একটা ঢেউয়ে দুলতে থাকে হৃদয়খানি? তুমুল জলোচ্ছ্বাসে সব স্মৃতি এসে হানা মারে? ঝড় এসে তোমাকে আছড়ে ফেলে দিতে চায় মাটিতে? চোখ ভর্তি বানের পানি আসে কি? 

নাকি একটি রিকশা না পাওয়ার যাতনায় চোখ বুজে আসে ক্লান্তিতে? শুধু মনে পড়ে এই মুখ কতো চেনা ছিলো একদিন, এখন এই ময়লা জুতো পায়ে ঘুরে? টিশার্ট ছেড়ে পাঞ্জাবী গায়ে? হতচ্ছাড়া একটিমাত্র রিকশা। তুমি কামনা করেছিলে শুধু শূন্যতা, একটি খালি রিকশা।  

Comments

Popular posts from this blog

অসম্ভ্রম অন্ধকার