অসম্ভ্রম অন্ধকার

 রাতের খাওয়া সাঙ্গ হলে দ্রুততার সাথে মশারীর ঘরে ঢুকে যাই। বাতিটা নিভিয়ে দিয়ে—চায়ের কাপটা বালিশের পাশে আপাতত থাক, এখন আলস্য শোষণ করেছে শক্তি। চশমাও থাক, আঁধারে মূর্ত পৃথিবীর দেখবার নেই কিছু। নাছোড়বান্দা মশাগুলো মশারীর গায়ে অবিরাম ঢুঁস দিয়ে চলে। পিনপিন সুর—কি কথা বলে? 

আমি এখন অবচেতনায় সওদাগরি হয়ে ঘুরে আসি প্রাচীন কোনো গুহায় যেখানে আমার জন্মের বীজ রোপিত হয়েছিলো। মনোহর অন্ধকার চিরদিন মানুষের উদ্দীপনা যুগিয়েছে। ক্ষান্ত শব গুলো ঘুমের বাসনে আশ্রয় নিয়েছে। ঘুমের উমে পেয়েছে অবিরাম স্বপ্ন। স্বপ্নের নির্যাস ভুলিয়ে দিয়েছে কাল। অবচেতনার ঘোরে সওয়ারী হয়ে ঘুরে এসেছি বদরের প্রান্ত, ট্রয়। বারবার আমাকে ধ্বংস করতে চেয়েছে নীল আলো। গলায় ক্ষুর চেপে ধরেছে বোবা ঘোড়া। বহু বাড়ি-ঘর-শহর-শরীর ছুঁয়ে বহু দূরের ধুলোবালি নিয়ে অবশেষে উত্তুরে হাওয়া আমার ঘরে আসে। পুরাকাল থেকে সে আসে সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়ে৷ অন্ধকার কেটে কেটে চলে যায় সময়ের উত্তরতম কোণে। যেখানে গিয়ে ক্লান্ত বাতাস অবশেষে লুটিয়ে পড়বে—যখন জানবে দূত সতর্কবার্তা নিয়ে ফিরে আসার আগেই রাজার মৃত্যু হয়েছে। পৃথিবী নিমজ্জিত হবে বন্ধ্যা অন্ধকারে। যে অন্ধকারে আমরা একেকবার বীজ রোপন করে চলেছি নাম না জানা বংশধরদের। অন্ধত্ব নিয়ে জন্ম হবে যাদের—ইবাদত বন্দেগীর মতো হাতড়ে হাতড়ে পথ চলে পা ফসকে খাদে পড়ে যাবে—শূন্যতার খাদে।


১ এপ্রিল, একুশ

Comments

Popular posts from this blog

দূরের একটি দ্বীপ